রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের নাজিরারটেক এলাকার সমুদ্র উপক‚লে ট্রলারের হিমঘর থেকে উদ্ধার হওয়া ১০ জনের মরদেহ নিয়ে এখন চলছে নানা আলোচনা। ধারণা করা হচ্ছে গত ৭ এপ্রিল সাগরে গিয়ে নিখোঁজ থাকা ১৪ জেলেদের ১০ জনের মরদেহ হতে পারে এসব।
কক্সবাজারের মহেশখালী ও পেকুয়া উপজেলার জেলেদের দেয়া তথ্য মতে, গত ৭ এপ্রিল মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার মৃত রফিক আলমের ছেলে শামসুল আলম তার নিজস্ব মালিকানাধীন একটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ১৪ মাঝিমাল্লা সহ সাগরে মাছ ধরতে যান।
এর ৩ দিন পর ১০ এপ্রিল সাগর থেকে মাছ ধরে ফিরে আসা কালারমার ছড়া ইউনিয়নের আধাঁরঘোনা গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে বাবু জানিয়েছিলেন, ওই ট্রলারের ১৪ মাঝিমাল্লা অপর একটি ট্রলারকে ডাকাতি করার অভিযোগে কয়েকটি ট্রলার ঘীরে আটকে ফেলে। এরপর ১৪ জনকে হিমঘরে আটকে দিয়ে ট্রলারটি ডুবিয়ে দেয়। ওই ট্রলারের বাবুর আপন ভাই হায়াত উল্লাহও রয়েছেন।
এরপর থেকে ট্রলার বোটের মালিক শামসুল আলম সহ ১৪ মাঝিমাল্লা নিখোঁজ রয়েছে।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন, মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের পূর্ব আঁধারঘোনা গ্রামের ছালেহ আহমদের ছেলে আব্দুল মালেক (২৫) ও মোহাম্মদ রিদুয়ান (২৩), আব্দুস সালামের ছেলে মো. হায়াত (২৪), দানু মিয়ার ছেলে আব্দুল মান্নান (২৬), আকবর আলীর ছেলে মাহবুব আলম (২৮), মো. শরীফের ছেলে নুরুছমদ (২৭), ছামিরাঘোনা এলাকার আবু জাফরের ছেলে নজরুল (২৭), অফিসপাড়া এলাকার হেলাল উদ্দিন (২৫), শাপলাপুর ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জাফর আলমের ছেলে মো.শওকত উল্লাহ (১৮), মূসা ছেলে উসমান গণি (১৭), শাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৩), মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির (৪৫)।
এদিকে, রবিবার দুপুরে কক্সবাজারের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে একটি ট্রলারের হিমঘর থেকে ১০ টি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মী।
ঘটনাস্থল থেকে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া জানিয়েছেন, কক্সবাজারের স্থানীয় জেলেরা বঙ্গোপসাগরের গভীরে ফিশিং ট্রলারটি ভাসতে দেখে ক‚লে নিয়ে আসে। আনার পর ট্রলারের ভেতরে মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ১০ টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর কোন মরদেহ আছে কিনা তল্লাশী চালানো হচ্ছে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ট্রলারের ভেতরে থাকা মরদেহ পঁচে গেছে। ধারনা করা হচ্ছে কমপক্ষে ১০/১২ দিন আগে ট্রলারটি ডাকাতদলের হাতে আক্রান্ত হয়। সকল মরদেহ ফিশিং ট্রলারের কোলেস্টোরেজের (হিমঘর) ভেতরে ছিল। কারও পরিচয় এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
ওসি জানান, সাগরে যাদের আত্মীয়-স্বজন নিখোঁজ আছে এরকম বেশ কয়েকটি পরিবারের সদস্যরাও এসেছিল শনাক্ত করতে কিন্তু তারা কোন ভাবে শনাক্ত করতে পারেনি।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, মৃতদেহ গুলো যেহেতু একদম পঁচে গেছে, সে কারণে শনাক্ত করা যায়নি। তবে আমরা ডিএনএ সংরক্ষণ করছি। তা পরীক্ষা করে মৃতদেহ গুলো শনাক্ত করা হবে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply